Chai Seeds
চিয়া সিড বা চিয়া বীজ হল দুনিয়ার সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্যগুলোর একটি। শরীর ও মস্তিষ্কের জন্য উপকারী পুষ্টি দিয়ে ভর্তি এই জিনিস।
এক আউন্স (২৮ গ্রাম) চিয়া সিডে আছে-
ফাইবার- ১১ গ্রাম
প্রোটিন- ৪ গ্রাম
ফ্যাট- ৯ গ্রাম (যার ৫ গ্রাম আবার Omega-3s)
ক্যালসিয়াম- RDA (Recommended Dietary Allowance) এর ১৮%
ম্যাংগানিজ- RDA এর ৩০%
ম্যাগনেসিয়াম- RDA এর ৩০%
ফসফরাস- RDA এর ২৭%
সমুচিত পরিমাণে জিঙ্ক, ভিটামিন বি৩ (নায়াসিন), পটাশিয়াম, ভিটামিন বি১ (থায়ামিন) ও ভিটামিন বি২
এটি বেশ বিস্ময়কর যখন মাথায় আসে মাত্র এক আউন্সে প্রায় ১৩৭ ক্যালরি এবং এক গ্রাম পরিপাকযোগ্য কার্বোহাইড্রেট! বলে রাখি, এক আউন্স মানে ২৮ গ্রাম, বা দুই টেবিলচামচের মত।
আরো আছে! যদি ফাইবারকে বিয়োগ করেন এখান থেকে, যা কি না ক্যালরির মত অতটা ব্যবহৃত হয় না শরীরে, তাহলে #চিয়া সিডে প্রতি আউন্সে ১০১ ক্যালরি থাকে। মানে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ #পুষ্টি উপাদানের উৎস হিসাবে চিয়া সিডকে পৃথিবীর সেরা খাদ্যগুলোর একটা বলা যায়, প্রতিটি ক্যালরিই দরকারী।
চিয়া সিড হল “হোল গ্রেইন” (whole grain) ফুড, #অর্গানিক্যালি তৈরী হয়, নন-জিএমও এবং সাধারণত গ্লুটেন-ফ্রি।
সারমর্মঃ
ছোট সাইজ হওয়া সত্ত্বেও #চিয়াসিড পৃথিবীর সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবারগুলোর একটি। ফাইবার, প্রোটিন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও বিভিন্ন মাইক্রোনিউট্রিয়েন্টে ঠাসা এই জিনিস।
২- চিয়া সিড অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর
চিয়া সিডের আরেকটি চমৎকার দিক হল এতে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের উপস্থিতি। এই অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টগুলো বীজে বিদ্যমান সেনসিটিভ ফ্যাটকে পচে যাওয়া থেকে রক্ষা করে।
সাপ্লিমেন্ট থেকে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট নেওয়া খুব একটা ফলপ্রসু না হলেও খাদ্য থেকে নেওয়া অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট স্বাস্থ্যে ভাল প্রভাব ফেলে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, ফ্রি র্যাডিক্যাল উৎপাদনের বিরুদ্ধে কাজ করে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। ফ্রি র্যাডিক্যাল কোষের অণুর ক্ষতি করে, বার্ধক্য আনয়ন ও ক্যান্সারে ভূমিকা রাখে।
অনলাইনে কেউ কেউ দাবী করে চিয়া সিডে ব্লুবেরির চেয়ে বেশি অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে, কিন্তু আমরা এর স্বপক্ষে তেমন কিছু খুঁজে পাইনি।
সারমর্মঃ
চিয়া সিডে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আছে, যা সিডের নাজুক #ফ্যাটগুলোকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়াও স্বাস্থ্যের জন্য এর অনেক উপকারিতা আছে।
৩- প্রায় সবটুকু কার্বই ফাইবার
চিয়া সিডের পুষ্টি উপাদানগুলোর তালিকাটি দেখলে দেখবেন এক আউন্সে ১২ গ্রাম “কার্বোহাইড্রেট” আছে। কিন্তু, ওখানের ১১ গ্রামই হল ফাইবার, যা শরীরে হজম হয় না।
ফাইবার #রক্তে সুগার লেভেল বাড়ায় না, #ইনসুলিন নিঃসরণ ঘটায় না। সুতরাং একে কার্ব বলে গণ্য করা যায় না।
প্রতি আউন্সে সত্যিকারের কার্ব আছে মাত্র এক গ্রাম, যা কি না খুবই কম। অর্থাৎ, চিয়া সিড একটি লো-কার্ব ফুড।
এত ফাইবারের কারণে চিয়া সিড তার ‘ওয়েইট ইন ওয়াটারের’ (#weight in water) ১০-১২ গুণ বেশি শোষণ করতে পারে, জেলের (gel) মত হয়ে যায় ও পেটের ভিতর সেটা ফুলে ওঠে।
তাত্বিকভাবে, এতে পেট ভরা বোধ হবে। খাওয়া কমে যাবে, ফলে নিজে নিজেই আগের চেয়ে কম ক্যালরি গ্রহণ করবেন।
অন্ত্রের ভিতরের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলো এই ফাইবার খায়। ব্যাকটেরিয়াগুলোকে ঠিক মত খাইয়ে বাঁচিয়ে রাখা সুস্বাস্থ্যের জন্য খুবই জরুরী।
ওজনের দিক দিয়ে চিয়া সিডের ৪০% হল ফাইবার। ফাইবারের সেরা উৎসগুলোর একটি হল চিয়া সিড।
সারমর্মঃ চিয়া সিডের কার্বোহাইড্রেটের প্রায় সবটুকুই ফাইবার। এতে এর ‘ওয়েইট ইন ওয়াটারের’ ১০-১২ গুণ বেশি শোষণ করার ক্ষমতা থাকে। ফাইবার স্বাস্থ্যের জন্য নানা দিক থেকে উপকারী।
৪- চিয়া সিডে উচ্চমানের প্রোটিন আছে
চিয়া সিডে যথাযথ পরিমাণে প্রোটিন আছে। ওজনের দিক থেকে, এর ১৪% প্রোটিন, যা অন্যান্য উদ্ভিদের চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়াও এতে সুষমভাবে দরকারী কিছু অ্যামিনো অ্যাসিড আছে, যাতে শরীর ঐ প্রোটিনগুলো কাজে লাগাতে পারে। প্রোটিন স্বাস্থ্যের জন্য সবদিক থেকে উপকারী। ওজন কমানোর দিক দিয়ে এটি অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের চেয়ে অনেক এগিয়ে!
হাই-প্রোটিন যুক্ত খাবার ক্ষুধা কমায়। দেখা গেছে এতে খাবারের প্রতি অত্যধিক আকর্ষণ প্রায় ৬০% কমায় ও রাতের বেলায় টুকটাক খাবার ইচ্ছা ৫০% কমায়।
বিশেষত যারা প্রাণীজ প্রোডাক্ট খুব কম খান, তাদের জন্য চিয়া সিড খুবই চমৎকার প্রোটিনের উৎস।
সারমর্মঃ
চিয়া সিডে উচ্চমানের প্রোটিন বিদ্যমান, অন্যান্য উদ্ভিদের চেয়ে বেশিই। প্রোটিন ওজন কমানোর জন্য সবচেয়ে সহায়ক ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্ট এবং বহুলাংশে ক্ষুধা কমাতে সক্ষম।
৫- উচ্চমাত্রায় ফাইবার ও প্রোটিন থাকার কারণে চিয়া সিড ওজন কমাতে সাহায্য করে
অনেক এক্সপার্ট বিশ্বাস করেন যে #chiaseed ওজন কমাতে সাহায্য করে।
ফাইবার প্রচুর পরিমাণে পানি শোষণ করে পেটের ভিতরে ফুলে ওঠে। এতে পেট ভরা মনে হয় ও খাদ্যগ্রহণ ধীর হয়ে যায়।
গ্লুকোমানান (glucomannan) এরকমই একটি ফাইবার। এর উপর কিছু গবেষণায় দেখা গেছে এটি #ওজন কমায়।
আর চিয়া সিডের প্রোটিন ক্ষুধা কমিয়ে খাদ্যগ্রহণ কমায়।
‘#ওয়েইট-লস #ডায়েট’ শুধুমাত্র একটা-দুইটা আইটেম খাবারের সাথে যোগ করা বা খাবার থেকে বাদ দেওয়া না। পুরো খাবারের উপরই নির্ভর করে, সাথে #লাইফস্টাইলের উপরও (ঘুম, ব্যায়াম)।
ভাল লাইফস্টাইল আর ভাল ডায়েটের সাথে চিয়া সিড যোগ হলে তা অবশ্যই ওজন কমাতে সহায়ক হবে।
৬- চিয়া সিডে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড বিদ্যমান
ফ্ল্যাক্স সিডের মত চিয়া সিডেও প্রচুর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে। এমনকি চিয়া সিডে স্যামন মাছের চেয়েও বেশি ওমেগা-৩ আছে।
অবশ্য, মনে রাখা দরকার যে চিয়া সিডের বেশির ভাগ ওমেগা-৩ হল আলফা লিনোলিনিক অ্যাসিড (ALA), যা অতটা উপকারী না।
ALAকে শরীরের ব্যবহারযোগ্য হতে হলে প্রথমে একে EPA ও DHA, দু’টি “অ্যাকটিভ” ফর্মে রূপান্তরিত হতে হয়।
৭- চিয়া সিড রক্তের কিছু উপাদানের উন্নতি সাধন করে, এতে হৃদরোগ ও টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে
যেহেতু চিয়া সিডে ফাইবার, প্রোটিন ও ওমেগা-৩ প্রচুর পরিমাণে আছে, এটি মেটাবোলিক হেলথকে উন্নত করে।
দু’টি গবেষণায় দেখা গেছে চিয়া সিড, সয় প্রোটিন, নোপল সমৃদ্ধ একটি ডায়েট LDL কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমায়, HDL কোলেস্টেরল বাড়ায় ও প্রদাহ কমায়। কিন্তু যেহেতু এখানে চিয়া সিড ছাড়াও অন্যান্য উপাদান ব্যবহৃত হয়েছে, তাই শুধু চিয়া সিড সম্পর্কে কোন বক্তব্য দেওয়া যাচ্ছে না।
৮- হাড়ের জন্য উপকারী পুষ্টি উপাদানে ভরপুর
চিয়া সিডে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান আছে যা হাড়ের জন্য খুব উপকারী। এতে আছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম আর প্রোটিন। ক্যালসিয়ামের পরিমাণটা বেশ চমকপ্রদ, প্রতি আউন্সে ১৮% RDA। অধিকাংশ ডেইরি প্রোডাক্টের চেয়ে বেশি এটা! যারা ডেইরি প্রোডাক্ট খায় না তাদের জন্য চিয়া সিড ক্যালসিয়ামের খুব ভাল উৎস।
সারমর্মঃ
চিয়া সিডে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফোরাস আর প্রোটিন প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত। এর সবগুলোই হাড়ের জন্য খুবই উপকারী।
৯- চিয়া সিড টাইপ-২ ডায়াবেটিসে বেশ উন্নতি সাধন করতে পারে
এখন পর্যন্ত চিয়া সিডের সবচেয়ে সফল ব্যবহার দেখা গেছে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে।
এই গবেষণায়, ২০জন ডায়াবেটিক রোগীকে ১২ সপ্তাহ ধরে হয় ৩৭ গ্রাম চিয়া সিড বা ৩৭ গ্রাম গমের ভুসি খাওয়ানো হয়। চিয়া সিড খাওয়ানো হয়েছে যখন, তাদের কিছু হেলথ মার্কারে উন্নতি দেখা গেছে।
ব্লাড প্রেশার ৩-৬ mm/Hg কমেছিল এবং ইনফ্লেমেটরি মার্কার hs-CRP প্রায় ৪০% কমেছিল। vWF নামক একটি রিস্ক ফ্যাক্টর কমেছিল প্রায় ২১%।
ব্লাড সুগারেও হ্রাস দেখা গেছিল, কিন্তু উল্লেখযোগ্য পরিমাণে না।
সারমর্মঃ
টাইপ-২ ডায়াবেটিসের গবেষণায় দেখা গেছে চিয়া সিড উল্লেখযোগ্য ভাবে ব্লাড প্রেশার ও একটি ইনফ্লেমেটরি মার্কারকে কমাতে পারে।
১০- এক্সারসাইজে পারফরম্যান্সের উন্নতি সাধনে স্পোর্টস ড্রিংকের সমান ভূমিকা রাখতে পারে চিয়া সিড
শোনা যায় অ্যাজটেক ও মায়ানরা তাদের পারফরম্যান্সের জ্বালানী হিসাবে চিয়া সিড ব্যবহার করত।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে এটি কার্যকরী হতে পারে…
এই গবেষণায় ৬জন ব্যক্তি “কার্ব লোড” করে নেয় হয় গ্যাটোরেড দিয়ে, অথবা অর্ধেক গ্যাটোরেড অর্ধেক চিয়া সিডের মিশ্রণ দিয়ে।
তারা ট্রেডমিলে এক ঘণ্টা দৌড়ায়, তারপর তাদের ১০ কিলোমিটার দৌড়ের সময় মাপা হয়।
দু’টি গ্রুপের মধ্যে কোন পার্থক্য দেখা যায়নি।
অন্যভাবে বললে, ড্রিংকের মাঝে চিয়া সিড দেওয়াতে পারফরম্যান্সে কোন কমতি হয়নি, অর্থাৎ চিয়া সিড কাজে লেগেছে।
এই গবেষণা অনুযায়ী, এনডুর্যান্স ইভেন্টগুলোতে চিয়া সিড অ্যাথলেটদেরকে “কার্ব লোডে” সাহায্য করতে পারে, একই সাথে তাদের সুগার গ্রহণ কমিয়ে ও নিউট্রিয়েন্ট গ্রহণ বাড়িয়ে।
যাই হোক, এ বিষয়ে আরো বিষদ গবেষণা প্রয়োজন। যেহেতু চিয়া সিডের সিংহ ভাগ কার্বই ফাইবার, তাই কার্ব লোডিংএ চিয়া সিডের ব্যবহার খুব একটা বোধগম্য না।
সারমর্মঃ
ছোট এক গবেষণায় দেখা গেছে এনডুর্যান্স অ্যাথলেটদের কাছে চিয়া সিড আংশিকভাবে গ্যাটোরেডের জায়গা নিতে পারে। তবে এ নিয়ে আরো গবেষণা প্রয়োজন।
১১- চিয়া সিডকে সহজেই ডায়েটের অন্তর্ভুক্ত করা যায়
মানলাম এই পয়েন্টটা #স্বাস্থ্যের কোন উপকারী দিক না, তাও এটা গুরুত্বপূর্ণ।
চিয়া সিডকে খুব সহজেই ডায়েটের অন্তর্ভুক্ত করা যায়। একে ফ্ল্যাক্স সিডের মত চূর্ণ করা লাগে না, ফলে প্রস্তুত করা খুবই সহজ।
একে কাঁচা খাওয়া যেতে পারে, #জুসে ভিজিয়ে খাওয়া যায়, #পরিজ আর #পুডিংএ দিয়ে খাওয়া যায়, বা বেকড খাবারেও যোগ করা যায়। #সিরিয়াল, #ইয়োগার্ট, #ভেজিটেবল বা #রাইস ডিশের উপর চিয়া সিড ছিটিয়ে পরিবেশন করা যায়।
পানি ও ফ্যাট শোষণ করার ক্ষমতার জন্য একে সস গাঢ় করতে ব্যবহার করা যায়; এমনকি বিভিন্ন #রেসিপিতে #ডিমের বিকল্প হিসাবেও।
একে পানির সাথে মিশিয়ে জেলের (gel) মত বানানো যায়।
রেসিপিতে চিয়া সিড যোগ করলে নাটকীয়ভাবে তার পুষ্টিগুণ বেড়ে যায়।
একে সহজে সহনীয়ই মনে হয়… কিন্তু যদি প্রচুর ফাইবার খেতে অভ্যস্ত না হয়ে থাকেন, তাহলে একবারে বেশি খেলে পরিপাকে সাইড ইফেক্ট দেখা দিতে পারে।
সাধারণ ডোজ হল দিনে দুইবার, ২০ গ্রাম (প্রায় দেড় টেবিলচামচ) করে।
Collected all information from Internet
Reviews
There are no reviews yet.